সাইফ উদ্দীন আল-আজাদ
(কুষ্টিয়া প্রতিনিধি)
কুষ্টিয়াতে স্থানীয় হোসেনাবাদ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কবির হোসেন নির্ভরযোগ্য সুত্রে খবর পান পদ্মায় নৌকা ভরে ভারতে পাচার হচ্ছে ইলিশ।সদলবলে আরেক নৌকায় শুরু হয় খোঁজ। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের এই পদ্মা হয়ে ভারতে পাচার হতে যাওয়া ইলিশের চালান আটকের ঘটনাও বিরল। ইলিশ পাচারের খবর পেয়ে পুলিশের পিছু নেন সংবাদকর্মীরাও।ঘণ্টা দুয়েকের অভিযানে পদ্মার আলীনগর এলাকায় মাঝ নদীতে দেখা মেলে অবৈধ ভাবে পাচার হতে যাওয়া ইলিশ বাহী ট্রলারের। সেখানেই ভাসমান অবস্থায় ট্রলার পরিবর্তনের কথা ছিলো দু’দল পাচারকারীর। কৌশলে পুলিশ আটকে ফেলে দু’পক্ষের ৬ জনকে।পাওয়া যায় অত্যাধুনিক প্যাকেটে একেবারে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ১শ’৬ কেজি ইলিশ। সুত্রের দেয়া তথ্যে ইলিশের পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার কথা থাকলেও জানা যায় বিজিবির স্পিডবোট টহলের কারনে মাছ ভর্তি আরেক ট্রলার আগেই সটকে পড়েছে।আটক হওয়া ব্যাক্তিদের মধ্যে যারা মাছ এগিয়ে নিতে গেছে তারা জানায়, সীমান্তবর্তী এলাকা বাংলা বাজারের জিয়ারুল চোকদার তাদের এই চালান নিতে পাঠিয়েছেন। তবে তারা জানতেন এতে ইলিশ নয়, নদীর অন্যান্য ছোট মাছ আছে। আর, ইলিশের এই চালান এগিয়ে দিতে যাওয়া ব্যাক্তিরা জানান, বাংলাবাজার থেকে মাছ সরাসরি পাঠানো হতো ভারতে।ততক্ষণে নদী তীরে পৌছে গেছেন দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসা এবং তাৎক্ষণিক তদন্ত শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার্য না হওয়ায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ভিত্তিতে আটককৃত মালামাল ও নৌকাসহ ছ’জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত এঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো।কবির হোসেন জানান, আমরা প্রথমে সন্দেহভাজন নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করি পরে কৌশলে পাচারের উদ্দেশ্যে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই আটক করতে সক্ষম হই।এসিল্যান্ড আজগর আলী জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আল বেরুনী ও ওসি নিশিকান্ত সরকারের উপস্থিতে জব্দ করা ১০৬ কেজি ইলিশ মাছ নিলামে বিক্রি করে বিক্রয় মূল্য সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।মাছ পাচারে ব্যবহৃত ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে।বছরের এই মৌসুমে শত-শত কেজি ভালো মানের ইলিশের বিনিময়ে ভারত থেকে মাদকদ্রব্য আমদানি করে চোরাকারবারিরা। তবে এসব ইলিশ সাধারণত বরিশাল বা চাঁদপুর থেকে কেনা হয় বলে জনশ্রুতি আছে নদীতীরবর্তী সীমান্ত এলাকায়।