এম,এবি ছিদ্দিক নোয়াখালী :
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যথাযথ মর্যাদায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরর্শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৪৯ তম শহীদ দিবস পালিত হয়েছে।আজ ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় উপজেলার ৯ নং দেওটি ইউনিয়নের নান্দিয়া পাড়া এলাকায় সাবেক বাগপাঁছড়া গ্রাম বর্তমান শহীদ রুহুল আমিন নগরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্মৃতি যাদুঘর ও গ্রন্থাগারে এই শহীদ দিবস পালিত হয়।
সোনাইমুড়ি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে শহীদের পতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্যদিয়ে এক আলোচনা সভা মিলাদ ও দু’য়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিনাপালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষভাবে, বক্তব্য রাখেন সোনাইমুড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আ ফ ম বাবুল বাবু,উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ভিপি মাহফুজুর রহমান বাহার,আওয়ামীলীগ নেতা কিংমোজাম্মেল হক, উপজেলা মু্ক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার গোলাম মাওলা,সাবেক কমান্ডার ইউছুফ মাষ্টার,বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক উল্যা দাদা,স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল হোসেন বাহার, ৯ নংদেওটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন সাকিল প্রমূখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার সবুজ। আলোচনা সভায় বক্তাগন নোয়াখালীর কৃতিসন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত দেশপ্রেম ও ত্যাগের মহত্বের ইতিহাস বর্ণনা করে এই বীরের আদর্শে সবাইকে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহবান জানান এবংতাঁর প্রতি পরম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান নূরুল আমিন সাকিল উর্ধ্বতন প্রশাসনিক মহলের নিকট খুলনার রুপসা নদীর তীরে অবস্থিত এই বীরের সমাধীস্থল যথাযথ মর্যাদায় তাঁর জন্মস্থান বাগপাঁচড়া রুহুল আমিন নগরে এনে প্রতিস্থাপন করার দাবী জানান।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ৯ ই ডিসেম্বর খুলনার মঙ্গলা সমুদ্রবন্দরে পাকিস্তানী নৌঘাঁটি তিতুমির দখলের অভিযানে মুক্তিযুদ্ধ রণাঙ্গনের রণতরী পলাশ ও পদ্মা এবং মিত্রবাহিনীর রণতরী পানভেনের বিজয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে শত্রুবাহিনীর আকাশ পথে হঠাৎ বিমান হামলায় মুক্তির রণতরী পদ্মা ও পানভেন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে। অপর দিকে অসীম সাহসে রণতরী চালিয়ে পলাশের ইঞ্জিন পরিচালক বীর শেষ্ঠ রুহুল আমিন ১০ ডিসেম্বর হিরণপয়েন্টে গিয়ে উঠার মূহুর্তে শত্রুর কামানের গোলায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে পলাশের ইঞ্জিন রুম সেইসাথে আহত হন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।এসময় তিনি আহত অবস্থায় নদীতে ঝাঁপদিয়ে আত্মরক্ষায় নদী কিনারায় গিয়ে উঠেন।কিন্তু নদী পাড়ে পূর্ব থেকে অপেক্ষমান শত্রু সেনা পাকমিলিশিয়া রাজাকারগং তাঁকে ধরে নিয়ে ব্যায়নেটের আঘাতে খ্ঁছে খুঁছে হত্যা করে তাঁর লাশ নদী পাড়ে ফেলে যায়। ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন দেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই মুক্তিকামী দেশপ্রেমিক বীরযোদ্ধাকে খুলনার রুপসা নদী পাড়ে সমাহিত করে।১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমজিবর রহমান দেশের সাতজন মুক্তিবীরকে বীর শ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন। শহীদ রুহুল আমিন ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের একজন নোয়াখালীর কৃতিসন্তান। ২০০৮ সালে তৎকালীন সরকারের উদ্যোগে এই শহীদ বীরশ্রেষ্ঠের স্মৃতি স্মরণে তাঁর জন্মভূমি বাগপাঁচড়ায় গড়ে তোলেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্মৃতি যাদুঘর ও গ্রন্থাগার।অপর দেকে গ্রামের নাম পাল্টিয়ে রাখা হয় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন নগর।এখানে এই শহীদের নামে গড়ে তোলা হয় একাধীক শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান।