সামরুজ্জামান (সামুন) কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রীর রহস্যজনক আত্মহত্যার পর চতুর্থ স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে অবশেষে সেই আলোচিত ভন্ড প্রেমিক রবিউল আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার ভোরে কুমারখালীর হলবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ভন্ড প্রেমিক রবিউল উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের মৃত শাজাহান প্রামিনের ছেলে।
এর আগে শনিবার (২ জানুযারী) চতুর্থ স্ত্রী মৃত মৌসুমি আক্তারের মামা ও পালক পিতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনের আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-৩।
মামলার বাদী শহিদুল বলেন, শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের মৃত শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে রবিউল আলম ২ বছর পূর্বে কলেজে পড়াকালীন মৌসুমি খাতুনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই মৌসুমিকে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতেন। রবিউল আলম, তার মা ভানু খাতুন, চাচা আহমদ আলী রেনু ও বোন শাহিদা খাতুন ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে তার উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে মৌসুমি খাতুন ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে রহস্যজনকভাবে আত্মহত্যা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, রবিউল আলম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি রবিউলকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেফতার কৃত আসামী রবিউল আলম ১৬ বছর আগে ২০০৪ সালে প্রথম বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর কল্যাণপুরের সাকিরের মেয়ে জোসনা কে বিয়ে করেন। নির্যাতন সইতে না পেরে জোসনা একটি ছেলে সন্তান রেখে আত্মহত্যা করেন। এর এক বছরের মাথায় রবিউল দয়ারামপুর গ্রামের সাজাইয়ের মেয়ে মনিরাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। তবে তাদের সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অন্তঃসত্বা অবস্থায় আত্মহত্যা করেন মনিরা। তারপর গত দুই বছর আগে পালক কন্যা মৌসুমিকে বিয়ে করেন। এরই মাঝে গোপনে রাজিয়া সুলতানা নামে আরেক তরুণীকে বিয়ে করে শহরে বসবাস করেন রবিউল। চতুর্থ স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর পর পালিয়ে যান রবিউল।